সাতক্ষীরায় বিএনপি কর্মী হুমায়ুন কবীরকে ঢাকা থেকে তুলে এনে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইলতুতমিশ, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মহিদুল ইসলাম ও সাবেক পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা হয়েছে।
গত রোববার সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এ মামলাটি করেন সদর উপজেলার কুচপুকুর গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে ও নিহতের ভাই আজগর আলী। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত সপেক্ষে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার নামীয় অন্য আসামিরা হলেন—সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শেখ সেকেন্দার আলী, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সাবেক পিপি সদর উপজেলার কামারবাশা গ্রামের অ্যাড. আব্দুল লতিফ, কুচপুকুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফি, রবিউল ইসলাম, নবের আলী, রনি, জনি, ইমামুল হক পলাশ, আনারুল ইসলাম, শিমুল, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলাম, দেবনগরের মুনছুর আলী, হামজার আলী, কুচপুকুরের সাইফুল ইসলাম ও কাশেপুর গ্রামের জাফর।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন সন্ত্রাসী ও আ.লীগ নেতা নজরুল ইসলাম আতোতায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর এ মামলার বাদী আজগার আলীসহ তার পরিবারকে গুম ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে আসামিরা। প্রাণভয়ে বাদীসহ তার ভাই হুমায়ন কবীর ঢাকায় চলে যান। সেখানে হুমায়ন কবির গাড়ি চালিয়ে জীবন যাপন করতে থাকেন।
একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বিএনপি কর্মী হুমায়ন কবিরকে সাবেক পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইলতুতমিশ, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মহিদুল ইসলাম ও শেখ সেকেন্দার আলীসহ অন্য আসামিদের ইন্ধনে ধরে আনা হয়। এরপর তাকে ছাড়ার জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং অজানা স্থানে নিয়ে তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করেন।
একপর্যায়ে হুমায়ন কবিরের স্ত্রী চম্পা খাতুনের কাছ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তারা সাবেক পিপি আব্দুল লতিফের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা চাঁদা নেন। এরপরও তারা তাকে অজানা স্থান থেকে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে কাশেমপুর বাইপাস সড়কের পাকা রাস্তার উপর তার পিঠের বাম পাশে ও বুকে গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়।
এরপর তারা হুমায়ন কবির ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে মর্মে প্রচার দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী আ.ক.ম শামসুদ্দোহা খোকন জানান, ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটি করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি এসময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
টিএইচ